০৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

তানোরে ভূল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু থানায় অভিযোগ

তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট সময়ঃ ০৭:৩৪:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫
  • / ৫৭ বার পড়া হয়েছে।

তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর তানোরের মুন্ডুমালা পৌর সদরে গড়ে উঠা কথিত দি পদ্মা ক্লিনিক এ্যান্ড ডায়াগণস্টিক সেন্টারে ভুল চিকিৎসায় নবজাতক মুত্যুর অভিযোগ উঠেছে।এঘটনায় ৭ অক্টোবর মঙ্গলবার নবজাতকের পিতা আব্দুর রাজ্জাক বাদি হয়ে ক্লিনিক মালিকের বিরুদ্ধে তানোর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। কিন্ত্ত অভিযোগ তুলে নিয়ে মিমাংসার জন্য রাজ্জাককে নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে বাবু বলে তিনি জানান।
জানা গেছে, গত ৪ অক্টোবর শনিবার মুন্ডুমালা পৌর এলাকার মুন্ডুমালা ভাটার মোড় মহল্লার আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী সোহানা বেগমের প্রসব বেদনা দেখা দেয়।এমতাবস্থায় শনিবার সকালে ক্লিনিকের এক দালালের খপ্পরে পড়ে তারা প্রসুতিকে দি পদ্মা ক্লিনিক এ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যান।প্রথমেই রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষার কথা বলে ২৪০০ টাকা হাতিয়ে ক্লিনিকের কথিত মালিক বাবু। পরবর্তীতে বিকেলে রাজশাহী থেকে এসে চিকিৎসক মোস্তাক আহম্মেদ ফয়সাল (এমবিবিএস, সিসিডি (বারডেম) ডিএমইউ (আস্ট্রা) ডায়াে হাইপারটেনশন ও ডায়াবেটিস রোগে বিশেষ প্রশিক্ষন প্রাপ্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল আবাসিক মেডিকেল অফিসার) প্রসুতির অস্ত্রোপাচার করেন।অথচ বিশেষজ্ঞ সার্জন ব্যতিত অস্ত্রোপাচার করার কোনো সুযোগ নাই।কিন্ত্ত চিকিৎসক মোস্তাক আহম্মেদ ফয়সাল বিশেষজ্ঞ সার্জন নন। প্রসুতি ফুটফুটে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।এদিকে নবজাতকের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসক তাকে অক্সিজেন দেয়ার পরামর্শ দেন। কিন্ত্ত ক্লিনিক মালিক বাবু নিজেই নবজাতকের পাঁয়ে ইঞ্জেকশন পুশ করেন। এর পরই নবজাতকের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে।এক পর্যায়ে বাবু ক্লিনিক থেকে জোরপুর্বক নবজাতককে রাজশাহী নিয়ে যেতে বাধ্য করেন বলে জানান নবজাতকের পিতা আব্দুর রাজ্জাক।রাজ্জাক বলেন, রাজশাহী নেয়ার পথেই নবজাতকের মুত্যু হয়।তিনি বলেন,তার সন্তানের মৃত্যুর জন্য বাবু দায়ী,তিনি ক্লিনিক বন্ধ করাসহ বাবুর কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ১০ শয্যার একটি বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকের জন্য সার্বক্ষণিক একজন এমবিবিএস চিকিৎসক ও তিনজন প্রশিক্ষিত সেবিকা থাকার বিধান রয়েছে। আর ডায়াবেটিকস বিভাগের জন্য স্ব-স্ব সেক্টরে সরকার অনুমোদিত ও প্রশিক্ষিত টেকনিশিয়ান থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
সুত্র জানায়, যে কোনো প্রতিষ্ঠানে অস্ত্রোপাচার করার জন্য সরকারি অনুমোদন প্রয়োজন,একজন পিজিডি বা এফসিপিএস সনদধারী চিকিৎসক,একজন এ্যানেসথেশিয়া বিশেষজ্ঞ,আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ অস্ত্রোপাচার কক্ষ ইত্যাদি প্রয়োজন।এছাড়াও কোনো প্রসুতি রোগীর অপারেশন করতে হলে আগে তার রোগ নির্নয় করতে হবে,যেমন বাচ্চার অবস্থান,পর্যাপ্ত পানি আছে কি না, বাচ্চার সাইজ ইত্যাদি নির্নয় করতে হবে।
কিন্তু এসব নিয়মনীতির কোনো তোয়াক্কা না করেই দি পদ্মা ক্লিনিক এ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ গড়ে তোলা হয়েছে। এবিষয়ে জানতে চাইলে দি পদ্মা ক্লিনিক এ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক পরিচয় দিয়ে শাহজামাল বাবু বলেন, অপারেশনের আগে বলা হয়েছিল বাচ্চার অবস্থা ভালো না, তাই বাচ্চার কোনো সমস্যা হলে সেই দায় তারা নিবেন না,এমন মুচলেকা নেয়ার পর অপারেশন করা হয়েছে। এবিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন এস আই এম রাজিউল করিম বলেন, তারা এরকম কোনো অভিযোগ পাননি,তবে এবিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে বলে জানান তিনি।এবিষয়ে জানতে চাইলে ডাঃ মোস্তাক আহম্মেদ ফয়সাল বলেন,তিনি বিশেষজ্ঞ সার্জন নন,তবে তার পিজিডি ট্রেনিং নেয়া আছে। এবিষয়ে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আফজাল হোসেন বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেছে, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ট্যাগসঃ

নিউজটি শেয়ার করুন

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

আপলোডকারীর তথ্য

তানোরে ভূল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু থানায় অভিযোগ

আপডেট সময়ঃ ০৭:৩৪:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর তানোরের মুন্ডুমালা পৌর সদরে গড়ে উঠা কথিত দি পদ্মা ক্লিনিক এ্যান্ড ডায়াগণস্টিক সেন্টারে ভুল চিকিৎসায় নবজাতক মুত্যুর অভিযোগ উঠেছে।এঘটনায় ৭ অক্টোবর মঙ্গলবার নবজাতকের পিতা আব্দুর রাজ্জাক বাদি হয়ে ক্লিনিক মালিকের বিরুদ্ধে তানোর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। কিন্ত্ত অভিযোগ তুলে নিয়ে মিমাংসার জন্য রাজ্জাককে নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে বাবু বলে তিনি জানান।
জানা গেছে, গত ৪ অক্টোবর শনিবার মুন্ডুমালা পৌর এলাকার মুন্ডুমালা ভাটার মোড় মহল্লার আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী সোহানা বেগমের প্রসব বেদনা দেখা দেয়।এমতাবস্থায় শনিবার সকালে ক্লিনিকের এক দালালের খপ্পরে পড়ে তারা প্রসুতিকে দি পদ্মা ক্লিনিক এ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যান।প্রথমেই রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষার কথা বলে ২৪০০ টাকা হাতিয়ে ক্লিনিকের কথিত মালিক বাবু। পরবর্তীতে বিকেলে রাজশাহী থেকে এসে চিকিৎসক মোস্তাক আহম্মেদ ফয়সাল (এমবিবিএস, সিসিডি (বারডেম) ডিএমইউ (আস্ট্রা) ডায়াে হাইপারটেনশন ও ডায়াবেটিস রোগে বিশেষ প্রশিক্ষন প্রাপ্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল আবাসিক মেডিকেল অফিসার) প্রসুতির অস্ত্রোপাচার করেন।অথচ বিশেষজ্ঞ সার্জন ব্যতিত অস্ত্রোপাচার করার কোনো সুযোগ নাই।কিন্ত্ত চিকিৎসক মোস্তাক আহম্মেদ ফয়সাল বিশেষজ্ঞ সার্জন নন। প্রসুতি ফুটফুটে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।এদিকে নবজাতকের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসক তাকে অক্সিজেন দেয়ার পরামর্শ দেন। কিন্ত্ত ক্লিনিক মালিক বাবু নিজেই নবজাতকের পাঁয়ে ইঞ্জেকশন পুশ করেন। এর পরই নবজাতকের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে।এক পর্যায়ে বাবু ক্লিনিক থেকে জোরপুর্বক নবজাতককে রাজশাহী নিয়ে যেতে বাধ্য করেন বলে জানান নবজাতকের পিতা আব্দুর রাজ্জাক।রাজ্জাক বলেন, রাজশাহী নেয়ার পথেই নবজাতকের মুত্যু হয়।তিনি বলেন,তার সন্তানের মৃত্যুর জন্য বাবু দায়ী,তিনি ক্লিনিক বন্ধ করাসহ বাবুর কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ১০ শয্যার একটি বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকের জন্য সার্বক্ষণিক একজন এমবিবিএস চিকিৎসক ও তিনজন প্রশিক্ষিত সেবিকা থাকার বিধান রয়েছে। আর ডায়াবেটিকস বিভাগের জন্য স্ব-স্ব সেক্টরে সরকার অনুমোদিত ও প্রশিক্ষিত টেকনিশিয়ান থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
সুত্র জানায়, যে কোনো প্রতিষ্ঠানে অস্ত্রোপাচার করার জন্য সরকারি অনুমোদন প্রয়োজন,একজন পিজিডি বা এফসিপিএস সনদধারী চিকিৎসক,একজন এ্যানেসথেশিয়া বিশেষজ্ঞ,আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ অস্ত্রোপাচার কক্ষ ইত্যাদি প্রয়োজন।এছাড়াও কোনো প্রসুতি রোগীর অপারেশন করতে হলে আগে তার রোগ নির্নয় করতে হবে,যেমন বাচ্চার অবস্থান,পর্যাপ্ত পানি আছে কি না, বাচ্চার সাইজ ইত্যাদি নির্নয় করতে হবে।
কিন্তু এসব নিয়মনীতির কোনো তোয়াক্কা না করেই দি পদ্মা ক্লিনিক এ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ গড়ে তোলা হয়েছে। এবিষয়ে জানতে চাইলে দি পদ্মা ক্লিনিক এ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক পরিচয় দিয়ে শাহজামাল বাবু বলেন, অপারেশনের আগে বলা হয়েছিল বাচ্চার অবস্থা ভালো না, তাই বাচ্চার কোনো সমস্যা হলে সেই দায় তারা নিবেন না,এমন মুচলেকা নেয়ার পর অপারেশন করা হয়েছে। এবিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন এস আই এম রাজিউল করিম বলেন, তারা এরকম কোনো অভিযোগ পাননি,তবে এবিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে বলে জানান তিনি।এবিষয়ে জানতে চাইলে ডাঃ মোস্তাক আহম্মেদ ফয়সাল বলেন,তিনি বিশেষজ্ঞ সার্জন নন,তবে তার পিজিডি ট্রেনিং নেয়া আছে। এবিষয়ে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আফজাল হোসেন বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেছে, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।