১১:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫

ইউনেস্কোর ৪৩তম সাধারণ সম্মেলনের সভাপতি নির্বাচিত বাংলাদেশ

বোয়ালমারী, ফরিদপুর প্রতিনিধি  :
  • আপডেট সময়ঃ ০৭:৫৭:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫
  • / ৫২ বার পড়া হয়েছে।

বোয়ালমারী, ফরিদপুর প্রতিনিধি  :

বাংলাদেশের কূটনৈতিক ইতিহাসে যুক্ত হলো নতুন এক স্বর্ণালী অধ্যায়। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো)-র ৪৩তম সাধারণ সম্মেলনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের প্রার্থী রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা। ইউনেস্কোর সঙ্গে বাংলাদেশের ৫৩ বছরের সদস্যপদে এটি এক ঐতিহাসিক অর্জন, যা দেশের কূটনৈতিক সাফল্যের নতুন উচ্চতা নির্দেশ করছে।

প্যারিসে ভোটযুদ্ধ: জাপানকে হারিয়ে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয় ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে, ইউনেস্কোর নির্বাহী বোর্ডের ২২২তম অধিবেশনে গত ৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় ভোটগ্রহণ। এই ভোটে বাংলাদেশের প্রার্থী রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা পান ৩০ ভোট, আর জাপানের প্রার্থী পান ২৭ ভোট। মাত্র তিন ভোটের ব্যবধানে বাংলাদেশ জয় ছিনিয়ে নেয় এই মর্যাদাপূর্ণ পদে। প্রথমে বাংলাদেশ, জাপান, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া—এই চারটি দেশ প্রার্থীতা ঘোষণা করে। তবে সেপ্টেম্বর মাসে ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া প্রার্থীতা প্রত্যাহার করলে চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে।

অবশেষে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বলভাবে উঠে আসে ইউনেস্কোর সর্বোচ্চ পদে। বোয়ালমারীর কাদিরদীর সন্তান—বিশ্বমঞ্চের নায়ক রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদী গ্রামের কৃতী সন্তান।

তিনি প্রয়াত সমাজসেবক খন্দকার ফজলুল করিম (বিশু মিয়া)-র নাতি এবং অধ্যাপক খন্দকার রাবেয়া খানম ও এম. জাহিদ মিয়া-র পুত্র। তালহা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী।

বর্তমানে তিনি বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং ফ্রান্স, মোনাকো ও আইভরি কোস্টে রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর নানা বিশু মিয়া ছিলেন বোয়ালমারী অঞ্চলের একজন জনপ্রিয় নেতা, যিনি বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ও ভূমি দান করেন। তাঁর মা রাবেয়া খানম অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কলেজের অধ্যাপক এবং পিতা জাহিদ মিয়া ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী।

বাড়ির পাশে আরশিনগর, সেথায় এক পড়শি বসত করে এই চিরন্তন বাণী যেন সত্য হয়ে উঠেছে, যখন কাদিরদীর সন্তান তালহা উজ্জ্বল করেছেন বাংলাদেশের নাম বিশ্বমঞ্চে। ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের প্রথম সর্বোচ্চ পদ রাষ্ট্রদূত তালহা আসন্ন ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনে সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে উজবেকিস্তানের ঐতিহাসিক শহর সামারকান্দে, অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে। তিনি দায়িত্ব নেবেন রোমানিয়ার রাষ্ট্রদূত সিমোনা মিরেলা মিকুলেস্কুর উত্তরসূরি হিসেবে।

এই পদে বাংলাদেশ নির্বাচিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের মর্যাদা ও প্রভাব বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে।

জাতীয় নেতৃত্বের কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি. আর. আবরার এবং সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এই অর্জনকে অভিহিত করেছেন “একটি যুগান্তকারী কূটনৈতিক সাফল্য” হিসেবে। অধ্যাপক ইউনূস বলেন,> “এটি বাংলাদেশের জন্য এক গর্বের মুহূর্ত।

বিশ্বসভায় আমাদের কূটনৈতিক সক্ষমতার উজ্জ্বল প্রতিফলন এটি। রাষ্ট্রদূত তালহার প্রতিক্রিয়া ২০২১ সালে ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া রাষ্ট্রদূত তালহা বলেন,> “এটি শুধু আমার নয়, সমগ্র বাংলাদেশের অর্জন।

ইউনেস্কোর লক্ষ্য ও আদর্শ রক্ষায় আমি সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব। এলাকাবাসীর উচ্ছ্বাস ও গর্ব ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদী গ্রামে এখন উৎসবের আমেজ। প্রতিটি মুখে গর্বের হাসি, প্রতিটি হৃদয়ে আনন্দের ঢেউ।

এলাকাবাসীরা বলছেন—> “আমাদের এলাকার গর্ব আজ বাংলাদেশের অহংকারে রূপ নিয়েছে।

রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা—বোয়ালমারীর কাদিরদীর গর্ব, বাংলাদেশের বিশ্বমঞ্চের গৌরব।

ট্যাগসঃ

নিউজটি শেয়ার করুন

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ইউনেস্কোর ৪৩তম সাধারণ সম্মেলনের সভাপতি নির্বাচিত বাংলাদেশ

আপডেট সময়ঃ ০৭:৫৭:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

বোয়ালমারী, ফরিদপুর প্রতিনিধি  :

বাংলাদেশের কূটনৈতিক ইতিহাসে যুক্ত হলো নতুন এক স্বর্ণালী অধ্যায়। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো)-র ৪৩তম সাধারণ সম্মেলনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের প্রার্থী রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা। ইউনেস্কোর সঙ্গে বাংলাদেশের ৫৩ বছরের সদস্যপদে এটি এক ঐতিহাসিক অর্জন, যা দেশের কূটনৈতিক সাফল্যের নতুন উচ্চতা নির্দেশ করছে।

প্যারিসে ভোটযুদ্ধ: জাপানকে হারিয়ে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয় ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে, ইউনেস্কোর নির্বাহী বোর্ডের ২২২তম অধিবেশনে গত ৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় ভোটগ্রহণ। এই ভোটে বাংলাদেশের প্রার্থী রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা পান ৩০ ভোট, আর জাপানের প্রার্থী পান ২৭ ভোট। মাত্র তিন ভোটের ব্যবধানে বাংলাদেশ জয় ছিনিয়ে নেয় এই মর্যাদাপূর্ণ পদে। প্রথমে বাংলাদেশ, জাপান, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া—এই চারটি দেশ প্রার্থীতা ঘোষণা করে। তবে সেপ্টেম্বর মাসে ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া প্রার্থীতা প্রত্যাহার করলে চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে।

অবশেষে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বলভাবে উঠে আসে ইউনেস্কোর সর্বোচ্চ পদে। বোয়ালমারীর কাদিরদীর সন্তান—বিশ্বমঞ্চের নায়ক রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদী গ্রামের কৃতী সন্তান।

তিনি প্রয়াত সমাজসেবক খন্দকার ফজলুল করিম (বিশু মিয়া)-র নাতি এবং অধ্যাপক খন্দকার রাবেয়া খানম ও এম. জাহিদ মিয়া-র পুত্র। তালহা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী।

বর্তমানে তিনি বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং ফ্রান্স, মোনাকো ও আইভরি কোস্টে রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর নানা বিশু মিয়া ছিলেন বোয়ালমারী অঞ্চলের একজন জনপ্রিয় নেতা, যিনি বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ও ভূমি দান করেন। তাঁর মা রাবেয়া খানম অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কলেজের অধ্যাপক এবং পিতা জাহিদ মিয়া ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী।

বাড়ির পাশে আরশিনগর, সেথায় এক পড়শি বসত করে এই চিরন্তন বাণী যেন সত্য হয়ে উঠেছে, যখন কাদিরদীর সন্তান তালহা উজ্জ্বল করেছেন বাংলাদেশের নাম বিশ্বমঞ্চে। ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের প্রথম সর্বোচ্চ পদ রাষ্ট্রদূত তালহা আসন্ন ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনে সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে উজবেকিস্তানের ঐতিহাসিক শহর সামারকান্দে, অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে। তিনি দায়িত্ব নেবেন রোমানিয়ার রাষ্ট্রদূত সিমোনা মিরেলা মিকুলেস্কুর উত্তরসূরি হিসেবে।

এই পদে বাংলাদেশ নির্বাচিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের মর্যাদা ও প্রভাব বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে।

জাতীয় নেতৃত্বের কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি. আর. আবরার এবং সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এই অর্জনকে অভিহিত করেছেন “একটি যুগান্তকারী কূটনৈতিক সাফল্য” হিসেবে। অধ্যাপক ইউনূস বলেন,> “এটি বাংলাদেশের জন্য এক গর্বের মুহূর্ত।

বিশ্বসভায় আমাদের কূটনৈতিক সক্ষমতার উজ্জ্বল প্রতিফলন এটি। রাষ্ট্রদূত তালহার প্রতিক্রিয়া ২০২১ সালে ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া রাষ্ট্রদূত তালহা বলেন,> “এটি শুধু আমার নয়, সমগ্র বাংলাদেশের অর্জন।

ইউনেস্কোর লক্ষ্য ও আদর্শ রক্ষায় আমি সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব। এলাকাবাসীর উচ্ছ্বাস ও গর্ব ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদী গ্রামে এখন উৎসবের আমেজ। প্রতিটি মুখে গর্বের হাসি, প্রতিটি হৃদয়ে আনন্দের ঢেউ।

এলাকাবাসীরা বলছেন—> “আমাদের এলাকার গর্ব আজ বাংলাদেশের অহংকারে রূপ নিয়েছে।

রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা—বোয়ালমারীর কাদিরদীর গর্ব, বাংলাদেশের বিশ্বমঞ্চের গৌরব।