০৭:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চাটমোহরে গৃহবধূ হত্যাকান্ডঃ দোষীদের ফাঁসির দাবীতে মানববন্ধন

রুহুল আমিন, চাটমোহর, পাবনাঃ
  • আপডেট সময়ঃ ০৬:১৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৩৩ বার পড়া হয়েছে।

রুহুল আমিন, চাটমোহর, পাবনাঃ

পাবনার চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের উথুলী গ্রামের গৃহবধূ জাহানারা খাতুন (৫৫) কে হত্যা করা হয়েছে মর্মে দাবি করেছেন নিহতের স্বামীসহ তার পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী।
গৃহবধূ জাহানারা হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে। সোমবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

সোমবার দুপুর ১২টায় চাটমোহর উপজেলার ভাদরা বাইপাস মোড়ে গৃহবধূ জাহানারা হত্যার প্রতিবাদে ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী। মানববন্ধনে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এসময় বক্তব্য দেন, তানিয়া খাতুন, মনির উদ্দিন, জাহানার স্বামী ফজলুর রহমান, মোঃ আঃ রাজ্জাক, সাখাওয়াত হোসেন প্রমুখ।

একইদিন দুপুর ১টায় নিহত গৃহবধূ জাহানারা খাতুনের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন তার পরিবারের সদস্যরা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন জাহানারা খাতুনের স্বামী ফজলুর রহমান। তিনি দাবি করেন, তার স্ত্রী জাহানারাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে প্রতিবেশি মিরাজ মেম্বার,তার ছেলে সাগর ও মিরাজের পরিবারের সদস্যরা। গত ০৫/০৬/২০২৫ ইং তারিখে সকালে বাড়ির অদূরে জনৈক আঃ গফুরের লিচু বাগানে জাহানারা খাতুনের ঝুলন্ত মৃতদেহ পাওয়া যায়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ৪/০৬/২০২৫ ইং তারিখে পূর্ববিরোধের জের ধরে মিরাজ মেম্বার গং জাহানারাকে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করে এবং প্রকাশ্যে মেরে ফেরার হুমকি দেয়। জাহানারা স্থানীয় প্রধানদের কাছে বিচার প্রার্থনা করলেও প্রধানরা দাপটশালী ও প্রভবশালী মিরাজের ভয়ে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। জাহানার সন্ধ্যার পরও বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুজি করতে থাকে। আঃ গফুরের লিচু বাগানেও তার খোঁজ করা হয়। কিন্তু কোথাও পাওয়া যায়নি। জাহানারা খাতুনের স্বামীর দাবি তার স্ত্রীকে হত্যা করে রাতের কোন এক সময় আঃ গফুরের লিচু বাগানে লিচু গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখে মিরাজ গয়।

এ ঘটনার পর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠায়।থানায় অভিযোগ দেওয়া হলেও পুলিশ হত্যা মামলা গ্রহণ না করে আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলা নেয়। বিবাদী করা হয় মিরাজের পরিবারের সদস্যদের। ইতোমধ্যে তারা আদালতে হাজির হয়ে জামিন লাভ করে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় মিরাজ গং জামিন পাওয়ার পর জাহানারা খাতুনের স্বামীসহ তার পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য এবং আর কোন কিছু না করার জন্য চাপ দিচ্ছে। অন্যথায় পরিণত খারাপ হবে বলে শাসাচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়,থানা পুলিশ জাহানারা মৃত্যুর বিষয়টি ভিন্নখাতে নিয়েছে। আমাদের সহযোগিতা করেনি। সংবাদ সম্মেলনে নিহতের ভাই মামুনুল হক,পুত্রবধূ কুলছুম খাতুন, আঃ রাজ্জাক, মনির উদ্দিনসহ এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে নিহত গৃহবধূ জাহানারা খাতুনের স্বামী ও তার পরিবারের সদস্য এবং এলাকাবাসী জাহানারা খাতুনের মামলাটি হত্যা মামলায় রুপান্তর করে দোষিদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানান।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সাবেক ইউপি সদস্য মিরাজুল হক বলেন,নিহত জাহানারা আমার ভাইয়ের স্ত্রী। মাঝেমধ্যে আমার পরিবারের সাথে তাদের ঝগড়া হতো,এটা ঠিক। তবে তাকে মারধর,নির্যাতন বা মেরে ফেলার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। আমাকে মিথ্যে অভিযোগে ফাঁসানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে।

চাটমোহর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনজুরুল আলম বলেন.ইতোমধ্যে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এসেছে। সেখানে আত্মহত্যার বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। হত্যার বিষয়টি সত্য নয়।

ট্যাগসঃ

নিউজটি শেয়ার করুন

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চাটমোহরে গৃহবধূ হত্যাকান্ডঃ দোষীদের ফাঁসির দাবীতে মানববন্ধন

আপডেট সময়ঃ ০৬:১৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫

রুহুল আমিন, চাটমোহর, পাবনাঃ

পাবনার চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের উথুলী গ্রামের গৃহবধূ জাহানারা খাতুন (৫৫) কে হত্যা করা হয়েছে মর্মে দাবি করেছেন নিহতের স্বামীসহ তার পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী।
গৃহবধূ জাহানারা হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে। সোমবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

সোমবার দুপুর ১২টায় চাটমোহর উপজেলার ভাদরা বাইপাস মোড়ে গৃহবধূ জাহানারা হত্যার প্রতিবাদে ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী। মানববন্ধনে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এসময় বক্তব্য দেন, তানিয়া খাতুন, মনির উদ্দিন, জাহানার স্বামী ফজলুর রহমান, মোঃ আঃ রাজ্জাক, সাখাওয়াত হোসেন প্রমুখ।

একইদিন দুপুর ১টায় নিহত গৃহবধূ জাহানারা খাতুনের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন তার পরিবারের সদস্যরা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন জাহানারা খাতুনের স্বামী ফজলুর রহমান। তিনি দাবি করেন, তার স্ত্রী জাহানারাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে প্রতিবেশি মিরাজ মেম্বার,তার ছেলে সাগর ও মিরাজের পরিবারের সদস্যরা। গত ০৫/০৬/২০২৫ ইং তারিখে সকালে বাড়ির অদূরে জনৈক আঃ গফুরের লিচু বাগানে জাহানারা খাতুনের ঝুলন্ত মৃতদেহ পাওয়া যায়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ৪/০৬/২০২৫ ইং তারিখে পূর্ববিরোধের জের ধরে মিরাজ মেম্বার গং জাহানারাকে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করে এবং প্রকাশ্যে মেরে ফেরার হুমকি দেয়। জাহানারা স্থানীয় প্রধানদের কাছে বিচার প্রার্থনা করলেও প্রধানরা দাপটশালী ও প্রভবশালী মিরাজের ভয়ে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। জাহানার সন্ধ্যার পরও বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুজি করতে থাকে। আঃ গফুরের লিচু বাগানেও তার খোঁজ করা হয়। কিন্তু কোথাও পাওয়া যায়নি। জাহানারা খাতুনের স্বামীর দাবি তার স্ত্রীকে হত্যা করে রাতের কোন এক সময় আঃ গফুরের লিচু বাগানে লিচু গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখে মিরাজ গয়।

এ ঘটনার পর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠায়।থানায় অভিযোগ দেওয়া হলেও পুলিশ হত্যা মামলা গ্রহণ না করে আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলা নেয়। বিবাদী করা হয় মিরাজের পরিবারের সদস্যদের। ইতোমধ্যে তারা আদালতে হাজির হয়ে জামিন লাভ করে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় মিরাজ গং জামিন পাওয়ার পর জাহানারা খাতুনের স্বামীসহ তার পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য এবং আর কোন কিছু না করার জন্য চাপ দিচ্ছে। অন্যথায় পরিণত খারাপ হবে বলে শাসাচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়,থানা পুলিশ জাহানারা মৃত্যুর বিষয়টি ভিন্নখাতে নিয়েছে। আমাদের সহযোগিতা করেনি। সংবাদ সম্মেলনে নিহতের ভাই মামুনুল হক,পুত্রবধূ কুলছুম খাতুন, আঃ রাজ্জাক, মনির উদ্দিনসহ এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে নিহত গৃহবধূ জাহানারা খাতুনের স্বামী ও তার পরিবারের সদস্য এবং এলাকাবাসী জাহানারা খাতুনের মামলাটি হত্যা মামলায় রুপান্তর করে দোষিদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানান।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সাবেক ইউপি সদস্য মিরাজুল হক বলেন,নিহত জাহানারা আমার ভাইয়ের স্ত্রী। মাঝেমধ্যে আমার পরিবারের সাথে তাদের ঝগড়া হতো,এটা ঠিক। তবে তাকে মারধর,নির্যাতন বা মেরে ফেলার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। আমাকে মিথ্যে অভিযোগে ফাঁসানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে।

চাটমোহর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনজুরুল আলম বলেন.ইতোমধ্যে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এসেছে। সেখানে আত্মহত্যার বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। হত্যার বিষয়টি সত্য নয়।