১০:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫

তানোরে বিলুপ্তপ্রায় পানি ফল

আলিফ হোসেন,তানোরঃ
  • আপডেট সময়ঃ ০৬:২৯:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৪ বার পড়া হয়েছে।

আলিফ হোসেন,তানোরঃ
রাজশাহীর তানোরে একটি সময় পানি ফল চাষের সুদিন ছিলো। অনেকে পানি ফল চাষ করে জীবীকা নির্বাহ করতেন।
কিন্ত্ত কালের বিবর্তনে সেই পানি ফল এখন বিলুপ্তপ্রায়। মৌসুমি পানি ফল স্থানীয় ভাষায় ‘পানি সিঙ্গারা’ নামে পরিচিত। এক দশক আগেও এই ফল চাষ করে কিছুটা হলেও অনেক প্রান্তিক চাষির পরিবারের মধ্যে সচ্ছলতা ফিরেছিল। এক সময়র তানোর-বায়া, তানোর-আমনুরা,তানোর-চৌবাড়িয়াসহ বিভিন্ন রাস্তার ধারে নয়নজুলির জলাবদ্ধ পানিতে ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার খাসপুকুর-জলাশয়ে পানি ফলের গাছ দেখা যেতো।কিন্ত্ত এসব রাস্তার ধারের নয়নজুলি ভরাট ও খাসপুকুর-জলাশয় ইজারা দেয়ায় সেখানে আর পানি ফল গাছের জন্ম হয় না।
জানা গেছে,তানোরে এক দশক আগেও কালীগঞ্জ, কামারগাঁ, বাতাসপুর,মান্দার বাঁকাপুর এলাকায় জলাবদ্ধ পতিত জমিতে শোভা পেতো পানি ফলের গাছ।প্রতিদিন ভোরে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা যাত্রীবাহী বাস, ভ্যানগাড়ি, ইজিবাইকের মাধ্যমে বস্তায় ভরে এই পানিফল বিক্রির জন্য উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যেতেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহমেদ জানান, পানি ফল একটি বর্ষজীবী জলজ উদ্ভিদ। পানি ফলের পুষ্টিরমান অনেক বেশি। উপজেলার পতিত জমিতে এই পানি ফলের চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। পানি ফল চাষে কম খরচে বেশী লাভ হয়। প্রতি বছর বোরো ধান কাটার পর, জলাবদ্ধ পতিত জমি, পানি জমে থাকা ডোবাসহ খাল-বিলে এই ফলের লতা রোপণ করা হয় (জমে থাকা পানিতে)। তিনি বলেন, তিন থেকে সাড়ে তিন মাসের মধ্যে গাছে ফল আসে। এ ফল চাষে সার-কীটনাশকের তেমন প্রয়োজন হয় না।
এদিকে তানোরের সীমান্তবর্তী মান্দার ভারশো ইউপির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পানি ফল চাষি বলেন, চৌবাড়িয়া-দেলুয়াবাড়ি রাস্তার ধারের নয়নজুলি ও আন্ধারসুরা-বিলউৎরাইল বিলে পানি ফল চাষ করতেন।কিন্ত্ত নয়নজুলি ভরাট ও বিলগুলো মাছ চাষীদের কাছে ইজারা দেয়ায় তারা আর পানি ফল চাষ করতে পারছেন না।
স্থানীয় সচেতন মহলের অভিমত,
সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি পানি ফল উৎদানের উৎসগুলো আগের অবস্থায় ফেরানো সম্ভব হলে,এলাকার অনেক প্রান্তিক কৃষক পানিফল চাষের সুযোগ পাবেন। ফলে একদিকে নিজেরা যেমন স্বাবলম্বী হতে পারবেন, ঠিক তেমনই গ্রামীণ অর্থনীতিতেও অবদান রাখা সম্ভব হবে। এক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা(এসএএও) বলেন,বর্তমানে পানিফল কৃষিতে নতুন এক সম্ভাবনাময় ফসল। আমাদের কৃষি বিভাগ সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে পানিফল চাষের বিস্তার ঘটাতে। যেকোনো পতিত পুকুর, ডোবা অথবা জলাশয়ে পানিফল চাষ করা সম্ভব। তুলনামূলক এর উৎপাদন খরচ কম।#

ট্যাগসঃ

নিউজটি শেয়ার করুন

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

আপলোডকারীর তথ্য

তানোরে বিলুপ্তপ্রায় পানি ফল

আপডেট সময়ঃ ০৬:২৯:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫

আলিফ হোসেন,তানোরঃ
রাজশাহীর তানোরে একটি সময় পানি ফল চাষের সুদিন ছিলো। অনেকে পানি ফল চাষ করে জীবীকা নির্বাহ করতেন।
কিন্ত্ত কালের বিবর্তনে সেই পানি ফল এখন বিলুপ্তপ্রায়। মৌসুমি পানি ফল স্থানীয় ভাষায় ‘পানি সিঙ্গারা’ নামে পরিচিত। এক দশক আগেও এই ফল চাষ করে কিছুটা হলেও অনেক প্রান্তিক চাষির পরিবারের মধ্যে সচ্ছলতা ফিরেছিল। এক সময়র তানোর-বায়া, তানোর-আমনুরা,তানোর-চৌবাড়িয়াসহ বিভিন্ন রাস্তার ধারে নয়নজুলির জলাবদ্ধ পানিতে ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার খাসপুকুর-জলাশয়ে পানি ফলের গাছ দেখা যেতো।কিন্ত্ত এসব রাস্তার ধারের নয়নজুলি ভরাট ও খাসপুকুর-জলাশয় ইজারা দেয়ায় সেখানে আর পানি ফল গাছের জন্ম হয় না।
জানা গেছে,তানোরে এক দশক আগেও কালীগঞ্জ, কামারগাঁ, বাতাসপুর,মান্দার বাঁকাপুর এলাকায় জলাবদ্ধ পতিত জমিতে শোভা পেতো পানি ফলের গাছ।প্রতিদিন ভোরে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা যাত্রীবাহী বাস, ভ্যানগাড়ি, ইজিবাইকের মাধ্যমে বস্তায় ভরে এই পানিফল বিক্রির জন্য উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যেতেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহমেদ জানান, পানি ফল একটি বর্ষজীবী জলজ উদ্ভিদ। পানি ফলের পুষ্টিরমান অনেক বেশি। উপজেলার পতিত জমিতে এই পানি ফলের চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। পানি ফল চাষে কম খরচে বেশী লাভ হয়। প্রতি বছর বোরো ধান কাটার পর, জলাবদ্ধ পতিত জমি, পানি জমে থাকা ডোবাসহ খাল-বিলে এই ফলের লতা রোপণ করা হয় (জমে থাকা পানিতে)। তিনি বলেন, তিন থেকে সাড়ে তিন মাসের মধ্যে গাছে ফল আসে। এ ফল চাষে সার-কীটনাশকের তেমন প্রয়োজন হয় না।
এদিকে তানোরের সীমান্তবর্তী মান্দার ভারশো ইউপির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পানি ফল চাষি বলেন, চৌবাড়িয়া-দেলুয়াবাড়ি রাস্তার ধারের নয়নজুলি ও আন্ধারসুরা-বিলউৎরাইল বিলে পানি ফল চাষ করতেন।কিন্ত্ত নয়নজুলি ভরাট ও বিলগুলো মাছ চাষীদের কাছে ইজারা দেয়ায় তারা আর পানি ফল চাষ করতে পারছেন না।
স্থানীয় সচেতন মহলের অভিমত,
সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি পানি ফল উৎদানের উৎসগুলো আগের অবস্থায় ফেরানো সম্ভব হলে,এলাকার অনেক প্রান্তিক কৃষক পানিফল চাষের সুযোগ পাবেন। ফলে একদিকে নিজেরা যেমন স্বাবলম্বী হতে পারবেন, ঠিক তেমনই গ্রামীণ অর্থনীতিতেও অবদান রাখা সম্ভব হবে। এক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা(এসএএও) বলেন,বর্তমানে পানিফল কৃষিতে নতুন এক সম্ভাবনাময় ফসল। আমাদের কৃষি বিভাগ সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে পানিফল চাষের বিস্তার ঘটাতে। যেকোনো পতিত পুকুর, ডোবা অথবা জলাশয়ে পানিফল চাষ করা সম্ভব। তুলনামূলক এর উৎপাদন খরচ কম।#