০৪:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদ শিরোনামঃ
শিশু সাজিদ ৩২ ঘণ্টা পর উদ্ধার, নেওয়া হয়েছে হাসপাতালে
আলিফ হোসেন,তানোরঃ
- আপডেট সময়ঃ ১০:২৯:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
- / ৩০ বার পড়া হয়েছে।

আলিফ হোসেন,তানোরঃ
রাজশাহীর তানোরে ব্যক্তি মালিকানাধীন অবৈধ সেচ মটরের পরিত্যক্ত বোরিংয়ে (গভীর সুড়ঙ্গ) পড়ে যাওয়া শিশু সাজিদকে উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ডিসেম্বর) রাত ৯টা ৭ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারি দল শিশুটিকে উদ্ধার করে। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন ডিরেক্টর লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।গত বুধবার দুপুরে তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের (ইউপি) কোয়েলহাট পুর্বপাড়া গ্রামের রাকিবের ছেলে দুই বছরের শিশু সাজিদ গভীর সুড়ঙ্গে পড়ে যায়। এরপর শিশুটি সেখানে আটকা পড়ে। ঘটনার পরপরই তানোর ফায়ার সার্ভিসের একটি দল উদ্ধার অভিযান শুরু করে। উদ্ধার তৎপরতা আরও জোরদার করতে রাজশাহী শহর এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বিশেষায়িত উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে যোগ দেয়। মোট ৮টি ইউনিট একযোগে উদ্ধার কাজ শুরু করেন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে মাটির ৪৫ ফুট গভীরে গিয়েও শিশুটিকে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছিল ফায়ার সার্ভিস। লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী দুপুরে জানিয়েছিলেন, ৪৫ ফুট গভীরে গিয়েও শিশুটিকে পাওয়া যায়নি। গর্তটি ১০০ ফুট গভীর হলেও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, বিশ্বের কোথাও এমন কোনো প্রযুক্তি নেই যে, এত গভীর গর্ত থেকে তাৎক্ষণিক কাউকে উদ্ধার করবে। গর্তটি প্রায় ২০০ ফুট গভীর। বিভিন্ন উন্নত দেশেও এত গভীরে পৌঁছাতে ৭৫-৭৮ ঘণ্টা সময় লাগে। তাজুল ইসলাম চৌধুরী দুপুরে আরও বলেছিলেন, প্রথম পর্যায়ে ৩৫ ফুট পর্যন্ত গর্তে ক্যামেরা পাঠানো হলেও কিছু দেখা যায়নি। এখন (বৃহস্পতিবার দুপুর) ৪৫ ফুট পর্যন্ত নামতে পেরেছে ফায়ার সার্ভিস। আমরা সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করছি। পদ্ধতিগত কোনো ভুলও এখানে নেই। এখন আমরা সবাই মিলে প্ল্যানিং করে শিশুটি উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত কার্যক্রম চালু থাকবে।
ফায়ার সার্ভিসের রাজশাহী বিভাগের উপপরিচালক মনজিল হক বলেন, ওই গর্তের ৮ থেকে ১০ ফুট দূরে একটি পুকুর আছে। তাই সেখানে সাবধানে খনন করা হচ্ছে, যেন পানি লিকেজ হতে না পারে। এর আগে বুধবার রাতে তানোর ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা আব্দুর রউফ বলেছিলেন, ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শিশুটিকে সুস্থ ও অক্ষত অবস্থায় উদ্ধারের সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। বিকেল ৫টা ৩০ মিনিট থেকে একটি এক্সকাভেটর গর্তের পাশেই সমান্তরাল আরেকটি পথ খুঁড়ছে এবং দুটি ট্র্যাক্টর মাটি সরাচ্ছে। শিশুটিকে বাঁচিয়ে রাখতে গর্তের ভেতরে নিয়মিত অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, বুধবার দুপুরের দিকে মাটি বোঝাই একটি ট্রলি হঠাৎ সেখানে দেবে যায়। এ ঘটনা দেখতে রুনা খাতুন তার ছেলে সাজিদকে নিয়ে মাঠে যান। হাঁটার সময় সাজিদ হঠাৎ ‘মা’ বলে চিৎকার করে ওঠে। তখন পেছনে ফিরে রুনা খাতুন বুঝতে পারেন ছেলে গর্তে পড়ে গেছে। কিছুক্ষণ পর তিনি নিচ থেকে আস্তে আস্তে ‘মা, মা’ ডাক শুনতে পান। রুনা খাতুন বলেন, গর্তটির মুখ খড় দিয়ে ঢাকা ছিল। আমরা কেউ ঢেকে রাখা গর্তটি দেখতে পাইনি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কোয়েলহাট গ্রামে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক কমে গেছে। গ্রামের মৃত তমির উদ্দিনের পুত্র কছির উদ্দিন পানির স্তর পরীক্ষা করতে গর্তটি করেছিলেন এবং পরে সেটি ভরাট করেন। কিন্তু বৃষ্টিতে মাটি বসে গিয়ে পুরনো গর্তটি আবার বের হয়ে আসে। এবিষয়ে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহীনুজ্জামান জানান, পরিত্যক্ত নলকূপটির বোরিংয়ের ব্যাস পাঁচ ফিট।#
ট্যাগসঃ




















